চলতি বছরের শুরু থেকেই রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান। মূলত ইমরান খান প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারিত হওয়ার পর এই সংকট বহুগুণে বেড়েছে এবং দেশটির বিবদমান নেতৃত্বের অনড় অবস্থানের কারণে সেই সংকট সমাধানের পথও অনেকটা ধূসর হয়ে আসছে।

এই পরিস্থিতিতে ইমরান খান পাঞ্জাব এবং খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন। আর এরপরই ইমরানের সঙ্গে আলোচনায় রাজি থাকার কথা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। দেশের স্বার্থে তিনি এই অবস্থান নিয়েছেনও বলেও দাবি করেছেন শেহবাজ।

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সোমবার তার পূর্বসূরি ইমরান খানকে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। শেহবাজ বলেছেন, তিনি পাকিস্তানের স্বার্থে তার মতভেদ দূরে রাখতে প্রস্তুত।

সোমবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে শেহবাজ শরিফ এই মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের জন্য একশত ধাপ এগিয়ে যাওয়া যেতে পারে। সকল মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রাখা যেতে পারে।’

শেহবাজ আরও বলেন, পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার সম্প্রতি তার অনুমতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির সঙ্গে দেখা করেছেন। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সদস্য।

পিটিআই বলছে, অর্থমন্ত্রী দারের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট আলভির বৈঠককে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর (ইমরান খান) সাথে যোগাযোগ চ্যানেল তৈরির জন্য ক্ষমতাসীন জোটের প্রচেষ্টার অংশ বলে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তানি মিডিয়া।

এদিন শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘দেশের স্থিতিশীলতার জন্য আমরা ১০০ ধাপ এগিয়ে যাব। বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে জড়িত উভয়পক্ষই এর জন্য সমানভাবে দায়ী। দেশ যখন এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে তখন আমাদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।’

সংবাদমাধ্যম বলছে, আগামী ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না হলে পিটিআই পাঞ্জাব এবং খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে আবারও হুমকি দেওয়ার পরে শেহবাজ শরিফের আলোচনার প্রস্তাব সামনে এলো।

কিন্তু আলোচনার প্রস্তাব দেওয়ার সময়ও ইমরান খানকে ‘আত্মকেন্দ্রিক’ এবং ‘প্রতারক’ বলে অভিহিত করে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জনগণকে বলতে চাই, এই ব্যক্তি (ইমরান খান) একজন প্রতারক যার জাতির ভবিষ্যতের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।’

শরিফ আরও বলেন, ‘তিনি (ইমরান খান) অত্যন্ত অহংকারী একজন ব্যক্তি যিনি শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা চিন্তা করেন এবং তিনি তার স্বার্থের জন্য যেকোনো স্তরে নত হতে পারেন।’

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধে ইমরান খানকে শওকত খানম হাসপাতালের জন্য সংগৃহীত অনুদান নিজের রাজনীতিতে ব্যয় করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।